সিম নিবন্ধন বাতিল করার নিয়ম ২০২৩ জিপি, রবি, বাংলালিংক, টেলিটক ও এয়ারটেল রেজিস্ট্রেশন বাতিল
একজন মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী হিসেবে আপনার ডিভাইসটিকে অবশ্য একটি সিম কার্ড ব্যবহার করতে হয়। সাধারণত আমরা যে মোবাইল ফোন ব্যবহার করি সেই মোবাইলের যে কোন অপারেটরের সিম সচল রাখে যার মাধ্যমে আমাদের আত্মীয় স্বজন আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
2009 সালের বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সিম রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা চালু হয়। তবে 2013 শুরুর দিকে অনলাইনের মাধ্যমে সিম রেজিস্ট্রেশন এর ব্যবস্থা চালু হয়। যার ফলে একজন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর ব্যবহার করে দেশের যে কোন অঞ্চল থেকে সিম ব্যবহার করতে পারবে তবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কর্তৃপক্ষ সিম ক্রয় করার ক্ষেত্রে বিশেষ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে যে একজন ব্যক্তি তার জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে 15 টির বেশী সিম নিবন্ধন করতে পারবেনা।
যেহেতু আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন এর একটি সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই আপনি অবশ্যই চাইবেন আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে অন্য কেউ ব্যবহার করুক। অর্থাৎ অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ব্যক্তি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে সিম রেজিস্ট্রেশন করে তা ব্যবহার করুক।
অন্যদিকে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে অন্য কেউ সিম রেজিস্ট্রেশন করলে উক্ত ব্যক্তি কোন অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িত হলে তাহলে আপনি এ ক্ষেত্রে আইনি জটিলতার মধ্যে পড়তে পারেন। এই সকল দুরবস্থা থেকে নিজেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে অনাকাঙ্ক্ষিত নিবন্ধিত সিম বাতিল করার চেষ্টা করুন। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদের দেখাবো সিম নিবন্ধন কিভাবে বাতিল করতে হয় তা সম্পর্কে।
সিম নিবন্ধন বাতিল করার নিয়ম
আইনি জটিলতা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে এবং নিজেই নিজের নামে সিম নিবন্ধন করার সুযোগ রাখতে হলে আপনাকে অবশ্যই অনাকাঙ্খিত সিম নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। এ অবস্থায় কিভাবে সিম নিবন্ধন বাতিল করতে হয় তা সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে তবে আলোচনার শুরুতে আমরা আপনাদের জানাতে চাই যে সিম নিবন্ধন কিভাবে চেক করতে হয়।
অর্থাৎ আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে কয়টি সিম রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে তা সম্পর্কে প্রথমে আপনাকে জানতে হবে। অতঃপর আপনি যদি দেখেন যে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে অন্য কোন ব্যাক্তি সিম ব্যবহার করছে এক্ষেত্রে আপনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।
এক NID দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করা সকল সিম যাচাই
রবি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম
দেশের প্রায় লক্ষাধিক গ্রাহক রবি সিম ব্যাবহার করে চলেছে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি যদি দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে রবি সিম ব্যবহার করে থাকে। এ অবস্থায় আপনার উচিত সিমের নিবন্ধন বাতিল করে দেওয়া আপনি যদি রবি গ্রাহক হয়ে থাকেন এবং আপনার রেজিস্ট্রেশন কৃত সিম টি বাতিল করতে চান তাহলে আপনাকে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
- সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার ক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে নিকটস্থ আপনার জোনাল যে রবি কাস্টমার সেন্টার রয়েছে সেই সেন্টারের সরাসরি যোগাযোগ করতে হবে।
- আপনি যে জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে সিম রেজিস্ট্রেশন করেছেন তার অরজিনাল কপি সংগ্রহ করতে হবে।
- অবশ্যই যে আপনি রেজিস্ট্রেশন বাতিল করবেন সে নম্বরটি সংগ্রহ করতে হবে।
- রবি কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস এর অফিস আপনার থেকে এসকল তথ্যগুলো সংগ্রহ করবে এবং আপনার সিমের বৈধতা যাচাই করবে।
- পরিশেষে 72 ঘণ্টার মধ্যেই আপনার সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দেওয়া হবে।
জিপি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম
প্রায় তিন কোটি গ্রাহক নিয়ে গ্রামীণফোনের মোবাইল অপারেটর তাদের দীর্ঘদিনের সার্ভিস দিয়ে চলেছে। অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ব্যক্তি যদি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহারের মাধ্যমে জিপির মোবাইল অপারেটরের কোন সিম ক্রয় করে থাকে। এ অবস্থায় আপনার নিজ দায়িত্বে সিমের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা জরুরি।
তবে আমাদের মাঝে অনেকেই রয়েছে যারা রেজিস্ট্রেশন কিভাবে বাতিল করতে হয় তা সম্পর্কে অবগত নন। তাদের উদ্দেশ্যে আমরা এখানে বলতে চাই যে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার পদ্ধতি সহজ। আপনারা আমাদের দেওয়ার নিচের তথ্যগুলো যথাযথভাবে করার চেষ্টা করুন তাহলে সহজেই সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে পারবেন।
- প্রথমে আপনাকে নিকটস্থ গ্রামীণফোন কাস্টমার সেন্টারে যোগাযোগ করতে হবে। তবে মনে রাখবেন যে ব্যক্তি জাতীয় পরিচয় পত্রের সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে চান তাকে সরাসরি জোনাল অফিস এ উপস্থিত হতে হবে।
- গ্রামীণফোন কাস্টমার সেন্টার থেকে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ফটোকপি চাওয়া হবে কেননা আপনার সিমটি ওই জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে রেজিস্ট্রেশন আছে কি না তা যাচাইয়ের জন্য তা গ্রহণ করবে।
- যে নাম্বারে রেজিস্ট্রেশন আপনি বাতিল করতে চান সে নম্বরটি অবশ্যই দাখিল করতে হবে।
- অতঃপর 72 ঘণ্টার মধ্যেই গ্রামীণফোন কাস্টমার সেন্টার থেকে আপনার ওই নম্বরটির সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দেওয়া হবে।
বাংলালিংক সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম
দেশের জনপ্রিয় মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবা বাংলালিংক তাদের গ্রাহকদের জন্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে সিম রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি চালু করেছেন। যার কারনে এক ব্যক্তি তার জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে 15 টি সিম রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে যদি অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ব্যক্তি সিম রেজিস্ট্রেশন করে তা ব্যবহার করে। তাহলে আপনি অবশ্যই তাড়াতাড়ি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করবেন কেননা ঐ সিম দ্বারা কোন অপরাধমূলক কাজে যদি ওই ব্যক্তি জড়িত হয়ে থাকে তাহলে আপনি আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতে পারেন।
- অতি শীঘ্রই বাংলালিংক কাস্টমার সেন্টারে যোগাযোগ করুন।
- কাস্টমার সেন্টারে যাওয়ার সময় অবশ্যই নিজ দায়িত্বে জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি নিয়ে যাবেন।
- যে মোবাইল নাম্বারের সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে চান তা সংগ্রহ করতে হবে।
- বাংলালিংক কাস্টমার সার্ভিস আপনার মোবাইল নম্বরটি গ্রহণ করবে এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের সাথে তথ্য মিললে অতি শীঘ্রই আপনার সিম রেজিস্ট্রেশন আগামী তিনদিনের মধ্যেই বাতিল করে দেওয়া হবে।
টেলিটক সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম
দেশের একমাত্র সরকারি মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন অপারেটর টেলিটক তার গ্রাহকদের জন্য রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ক্রয় করার বিশেষ সুবিধা প্রদান করেছে এ কারণে এখন আর অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ব্যক্তি পণ্যের রেজিস্ট্রেশনকৃত সিম ব্যবহার করতে পারবেন না।
- প্রথমে আপনার টেলিটক সিম টি কোন জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে নিবন্ধন করা হয়েছে তা যাচাই করে নিন।
- নিকটস্থ টেলিটক কাস্টমার সার্ভিস সেন্টারে যোগাযোগ করুন।
- আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র কাস্টমার সার্ভিস অফিসার কে দেখান।
- যে নম্বরে আপনি রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে চান তারা তাদের কাছে প্রমান সহ দিন।
- পরিশেষে আপনার আবেদনটি গ্রহণ করা হবে এবং আগামী তিনদিনের মধ্যেই উক্ত টেলিটক সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে।
উপরের আলোচনার ভিত্তিতে আপনারা আপনাদের জাতীয় পরিচয় পত্রের আলোকে সিম রেজিস্ট্রেশন চেক করতে পারবেন। পাশাপাশি অনাকাঙ্ক্ষিত রেজিস্ট্রেশন করা সিম গুলো বাতিল করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কোন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকলে আপনার মোবাইল অপারেটর অনুসারে নিকটস্থ কাস্টমার সার্ভিস সেন্টারে যোগাযোগ করুন।