মুখের ব্রণ দূর করার উপায় – ছেলে ও মেয়েদের প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ব্রণ দূর করার উপায়

আপনার মুখমন্ডল কতটা বেশি মসৃণ ও উজ্জ্বল তা নির্ভর করেই মানুষ আপনার রূপ যাচাই করে। এক্ষেত্রে ছেলে ও মেয়ে দুজনেরই মুখমন্ডল যদি মসৃণ ও পরিষ্কার হয়ে থাকে তাহলে আমরা তাকে এককথায় সুন্দর বলে থাকি। হরমোনজনিত কারণে বা অকারণে আপনার মুখে যদি অতিরিক্ত ব্রণ দেখা দেয় এবং পরবর্তী সময়ে ব্রণ ও কালো দাগ আকার ধারণ করে তাহলে এক্ষেত্রে আপনার দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে।
যে কোন উৎসব বা অনুষ্ঠানের আগে ত্বকে ব্রণ হলে আমাদের সৌন্দর্য অনেকখানি ফিকে হয়ে যায় তবে এমন ক্ষেত্রে আমরা রাতারাতি ব্রণ দূর করার মাধ্যম খোঁজে থাকি। অন্যকে আবার কেউ কেউ রয়েছে যারা ব্রণ প্রতীক ধৈর্য না দেখিয়ে ফাটিয়ে ফেলেন এতে আক্রান্ত স্থানে আরো ফুলে যায় এবং ফাটানোর ফর রক্ত বেরিয়ে কিছুদিন পর ফোলা ভাব ঠিকই কমে যায় তবে সেখানে একটি দাগ থেকে যায়। বাজারের দামি কসমেটিকস এর পরিবর্তে আপনারা যদি প্রাকৃতিক ভাবে ব্রণ দূর করতে চান তাহলে আপনাদের অবশ্যই আমাদের এখানে যে সকল নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেগুলো অনুসরণ করা উচিত।
কেননা এখানে আমরা আপনাদের জন্য শেয়ার করতে চলেছি কিছু ঘরোয়া প্রাকৃতিক অর্গানিক সামগ্রী প্রক্রিয়া গুলো আপনার ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর করতে সহায়তা করবে। এমনকি আমরা আপনাদের শতভাগ নিশ্চয়তা প্রদান করছি যে আমাদের এ নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করলে আপনি কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই আপনার মুখের কালো দাগ দূর করতে পারছেন।
ছেলে ও মেয়েদের মুখের ব্রণ দূর করার সহজ উপায়
আপনি ছেলে হওয়ার অথবা মেয়ে আপনার মুখে যদি কোন ধরনের দাঁত থাকে তাহলে সেটা আপনাকে অনেক বেশি হতাশায় ফেলবে। যার কারণে যে কোন উপায়ে আপনি চালাবেন কিভাবে এই দাগ দূর করা যায় তার সম্পর্কে জানতেন। বরাবরের মতো আমরা আপনাদের জন্য সর্বদা চেষ্টা করেছি যে কিভাবে সহজ ভাবে এসকল কাজগুলো করে আপনি মুখের ব্রণ দূর করতে পারবেন।
মুলতানি মাটি
মুখে ব্রণ হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো আপনার ত্বকে অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব। সুতরাং আপনার ত্বককে অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব এর ফলে ব্রণের সমস্যা দেখা দিলে এই ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনাকে মুলতানি মাটি পানি দিয়ে পেস্ট করে নিয়মিত লাগাতে হবে। মুলতানি মাটির টেবিল ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ বন্ধ করতে সাহায্য করে।
শসার রস
শসা প্রাকৃতিক ভাবে উৎপাদিত এক ধরনের পণ্য যার কারণে আপনি যদি প্রাকৃতিক ভাবে মুখের ব্রণ দূর করতে চান তাহলে অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। শসার রস তৈলাক্ততা দূর করতে খুবই কার্যকর যার কারণে প্রতিদিন বাইরে থেকে এসে শসার রস দিয়ে আপনি যদি সম্পূর্ণ মুখমণ্ডল পরিষ্কার করতে পারেন কিংবা আইস কিউব করে রেখে ইউজ করেন এতে আপনার ব্রণের সমস্যা রয়েছে তা খুব সহজে সমাধান হবে।
শসার রস চালের গুঁড়া ও মধু
আপনারা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন যে শসার রস মুখে ব্রণ দূর করতে খুবই কার্যকর এছাড়াও খান হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে এর সঙ্গে আপনি চালের গুঁড়া মিশিয়ে নিতে পারেন। তবে আপনার মধ্যে যদি এলার্জি না থাকে তাহলে সামান্য মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। সপ্তাহে দুই দিন এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলে ত্বক পরিষ্কার হবে।
কাঁচা হলুদ ও চন্দন কাঠের গুঁড়ো
কাঁচা হলুদ ও চন্দন কাঠের গুঁড়ো ব্রণের জন্য খুবই কার্যকর উপাদান। সমপরিমাণ বাটা কাঁচা হলুদ এবং চন্দন কাঠের গুঁড়ো একত্রে নিয়ে মেতে পরিমাণমতো পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে পারেন। মিশ্রণটি এরপর বহন আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পর শুকিয়ে ফেলুন এবং মুখ ঠান্ডা হওয়ার পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই মিশ্রণটি ব্রণ দূর করার পাশাপাশি ব্রণের কালো দাগ রয়েছে তা দূর করতেও সহায়তা প্রদান করে।
আপেল ও মধুর মিশ্রণ
আপেল ও মধুর মিশ্রণ হচ্ছে ব্রণের দাগ দূর করার সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি ঘরোয়া পদ্ধতি। এই কাজটি করার জন্য প্রথমেই আপনাকে আপেলের পেস্ট তৈরি করে তাতে চার থেকে ছয় ফোঁটা মধু মিশাতে হবে। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে করে আপনার মুখের টানটান ভাব বজায় থাকে এবং গায়ের রং হালকা ও করেন। আপনি যদি সপ্তাহে পাঁচ থেকে ছয় বার এটি ব্যবহার করতে পারেন আপনি কয়েকদিনের মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন।
তুলসী পাতার রস
ব্রণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া উপাদান রয়েছে তা হচ্ছে তুলসী পাতার রস। কেননা তুলসী পাতায় রয়েছে আয়ুর্বেদিক গঞ্জা শুধুমাত্র তুলসী পাতার রস * আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে রাখা যায়। পরবর্তীতে আপনাকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে এবং মুখ যখন শুকিয়ে যাবে এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এভাবে যদি আপনি প্রতিদিন তুলসীপাতার রস আমড়ার মুখমন্ডলে ব্যবহার করে থাকেন তাহলে দেখবেন এক সময় আপনার মুখের ব্রণ অনেকটাই দূর হয়েছে।
চন্দন কাঠের গুঁড়ো গোলাপ জল ও লেবুর রস
এই মিশ্রণটি তৈরি করার জন্য প্রথমেই চন্দন কাঠের গুড়ার সাথে গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। এরপর দুই থেকে তিন ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে গোলাপজল অনেকবার ত্বকের সাথে এডজাস্ট হয়না তারা সে ক্ষেত্রে গোলাপ জলের পরিবর্তে মধু ব্যবহার করতে পারেন। এই মিশ্রণ আপনার ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করবে সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া সম্ভব।
দারুচিনি গুঁড়া ও গোলাপজল
গোলাপজল নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ব্রণের দাগ কমিয়ে দিতে পারে এর পাশাপাশি দারুচিনি গুঁড়ার সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করতে পারেন। যে মিশ্রণটি তৈরি হবে তা আপনার ব্রণের ওপর লাগিয়ে 20 মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে করে ব্রণের সংক্রমণ চুলকানি ও ব্যথা আপনার অনেকটাই কমে যাবে।
ডিমের সাদা অংশ
রাতে শোওয়ার আগে ডিমের সাদা অংশ ব্রণ দূর করার জন্য আপনার একটি অন্যতম উপাদান হতে পারে। ডিমের সাদা অংশ গ্রহণ আক্রান্ত জায়গায় মাসাজ করে সারারাত রাখতে পারেন এবং এটি আপনার ত্বকের খসখসে ভাব দূর করতে সহায়তা করবে। তবে সবচেয়ে ভালো হবে যদি আপনি এর সাথে লেবুর রস যোগ করতে পারেন এবং আধঘন্টা পর ধুয়ে ফেলতে পারেন।
মুলতানি মাটি ও নিমপাতা
চার-পাঁচটা নিমপাতা ভালো করে ধুয়ে এর মধ্যে এক চামচ মুলতানি মাটি ও গোলাপজল মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। মিশ্রণটি যদি কারো হয়ে যায় তাহলে আপনি তার মধ্যে গোলাপজল মিশিয়ে নিতে পারেন। এর ফলে যে মিশ্রণটি তৈরি হবে সে মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে নিন এবং কিছুক্ষণ রাখার পর যখন আপনার মুখ শুকিয়ে যাবে তখন হালকা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
পুদিনা পাতা
যেহেতু আপনি প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে মুখের ব্রণ ও ব্রনের দাগ দূর করতে চাচ্ছেন তাই অতিরিক্ত গরমের কারণে ত্বকে ফুসকুড়ি অথবা ব্রণ হয় সেগুলো দূর করার জন্য পুদিনা পাতা উপকারী। টাটকা পুদিনা পাতা কেটে তারপর ব্রণের ওপর লাগিয়ে রাখুন 20 মিনিট এরপর তা ধুয়ে ফেলুন। এভাবে দেখবেন খুব সহজেই আপনার ব্রণের সমস্যা রয়েছে তার সমস্যার সমাধান করতে পারছেন।
ওপরের অংশে আমরা আপনাদের জন্য যেসকল তথ্যগুলো শেয়ার করেছি তার প্রতিটা নির্ভুল এবং আপনার ব্রণ দূর করতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমাদের নির্দেশনাগুলো আপনি যদি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে পারেন তাহলে অবশ্যই ব্রণ থেকে মুক্তি পাবেন। আমাদের পাশে থেকে দীর্ঘ সময় ধরে আর্টিকেল পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।