চুল পাকা থেকে মুক্তির উপায় – কম বয়সে চুল পাকা থেকে মুক্তি
আপনি আপনার চারপাশে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন যে এমন অনেকেই রয়েছেন যারা অল্প বয়সেই মাথার চুল পাকা শুরু হয়েছে। সাধারণভাবে বার্ধক্যজনিত কারণে আমাদের মাথার চুল পাকতে পারে কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে আমাদের মাথার চামড়ার পর্যাপ্ত ভিটামিন ও মিনারেলের অভাবে চুল পাকতে পারে। অল্প বয়সে চুল পাকলে অনেকেই চরম চিন্তার মধ্যে পড়ে যান এই কারণে তারা এটা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজে থাকে।
তারা বিভিন্ন ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে থাকে এবং দেশি-বিদেশি অনেক তেল ব্যবহার করে নিজেদের পাকা চুল থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করে। অনেকেই রয়েছেন যারা সাময়িক সমাধান হিসেবে চুলে কলপ ব্যবহার করে থাকেন তবে এতে চুল একেবারে কালো হয়না বরং আপনার চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার কারণে সাময়িক সমাধানের দিকে না এগিয়ে আপনি ঘরে বসে এখন সহজে অকালে চুল পাকা থেকে রেহাই পাওয়ার যেসকল উপায় গুলো রয়েছে সেগুলো অনুসরণ করতে পারেন।
আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে কেননা আমরা আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি চুল পাকা থেকে কিভাবে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া যায় অথবা আপনি যদি চুল ইতিমধ্যে পেকে যায় এই অবস্থা থেকে কিভাবে আপনার চুল পুনরায় কাল করবেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করা হয়েছে। আমাদের এখানে যে সকল টিপস গুলো আপনাদের উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে তা সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। যার কারণে আপনি নির্দ্বিধায় আমাদের দেওয়া নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করতে পারেন এবং প্রাকৃতিক ভাবে আপনার চুলপাকা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
আমলকি ও লেবুর রসের মিশ্রণ
আমলকি এবং লেবু এই দুইটি আমাদের দেশে খুব সহজে পাওয়া যায় এবং আমরা এটা কম দামে ক্রয় করতে পারি। এই দুইটি ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যার কারণে এই ফলটির পুষ্টিগুণ অত্যন্ত বেশি। শরীরের মেদ কমানো থেকে শুরু করে হৃদপিন্ডের সমস্যা ইত্যাদি অভ্যন্তরীণ সকল সমস্যার পাশাপাশি চামড়ার ইনফেকশন ও মাথার চামড়া জন্য প্রয়োজনীয় সকল ভিটামিন জোগান দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
সুতরাং অকালে চুল পাকা রোধের জন্য বাজার থেকে আমলকির গুঁড়া কিনে এনে তা লেবুর সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে মাথার চামড়ায় মাসাজ করতে পারেন তাহলে দেখবেন যে আপনি অনেকটাই লাভবান হচ্ছে। চুল মাসাজ করার পর আধা ঘন্টার মধ্যে আপনার চুলে শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলতে হবে।
পেঁয়াজ বাটা
সাধারণভাবে পেঁয়াজকে আমরা একটি মসলাজাতীয় খাবার হিসেবে ব্যবহার করে থাকলেও বাংলাদেশে কম বেশী সকল কাজেই এখন পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয়। সেই প্রাচীনকাল থেকেই পেয়াজকে চুলের বিশেষ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আপনার মাথার চুল গজানোর যদি কোন সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে সে সমস্যা সমাধানের জন্য পেঁয়াজবাটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অন্যদিকে পেঁয়াজবাটা যদি আপনি ভালোমতো বেটে প্রতিদিন কিছুক্ষণ মাথার চামড়া বা চুলে ম্যাসাজ করতে পারেন তাহলে সেবাটা শুকিয়ে 30 মিনিট পর ধুয়ে ফেললে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই আপনার পাকা চুলগুলো কালো হতে শুরু করবে। সুতরাং দ্রুত ফল পাওয়ার জন্য হলেও প্রতিদিন একবার করে এই উপায়ে অনুসরণ করতে পারেন।
নারিকেল তেল ও লেবুর রস
চুলের যত্নে নারিকেল তেলের কোনো জুড়ি নেই আর লেবুর গুনাগুন তো আগেই আমরা আপনাদের সাথে ব্যাখ্যা করেছি। পাকা চুলের হাত থেকে রেহাই পেতে হলে প্রতিদিন 4 চা চামচ নারিকেল তেলের সাথে আড়াই চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় এবং মাথার চামড়ায় লাগাতে পারেন তাহলে দুই সপ্তার মধ্যে আপনার পাকা চুল কালো হয়ে উঠবে। তার পাশাপাশি আপনার মাথার চামড়া সুস্থ থাকবে এবং কোন ধরনের খুশকি আক্রান্ত হবে না এর পাশাপাশি আপনার চুল হবে উজ্জ্বল।
গাজরের রস
গাজর একটি পুষ্টিকর সবজি উপাদান শরীরের জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল এর বেশিরভাগই আমরা এই সবজি উপাদান থেকে পেয়ে থাকি। তবে আপনি জানেন কি চুলের যত্নেও গাজর বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে তাই বাজার থেকে গাজোল কিনে এটি ব্লেন্ডার মেশিনের কিছু পরিমাণ চিনি মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর গাজরের জুস পাওয়া যাবে সেটি নিয়মিত পান করুন।
এভাবেই আপনি যদি প্রতিদিন অন্তত এক গ্লাস করে গাজরের রস পান করেন তাহলে আপনার পাকা চুলের প্রতিকার পাওয়া শুরু করবেন। শুধু চুল নয় এর পাশাপাশি আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে এই গাজরের জুস আপনাকে সাহায্য করবে।
তিলের বীজ এবং বাদাম তেল
বর্তমান বাজারে তিলের বীজ ও বাদাম তেল এ দুটি অনেক বেশি সহজলভ্য স্কিন ডাক্তারদের পরামর্শ যদি আপনি কখনো গ্রহণ করে থাকবেন তাহলে তারা প্রেসক্রাইব সর্বদা এই দুটি উপাদানের কথা উল্লেখ করে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে চুলের কোন ধরনের সমস্যা দিলে এই চিকিৎসার সবচাইতে বেশি উপকার পাওয়া সম্ভব এই দুইটি উপাদান থেকেই। প্রথমে তিলবীজ গুঁড়ো করে নিন এরপর তা বাদাম তেলের সাথে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
এই পেস্ট চুলের মাথার চামড়ায় লাগিয়ে 20 থেকে 30 মিনিট রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এভাবে যদি আপনি প্রতিদিন আপনার চুলে তিলের বীজ ও বাদাম তেলের মিশ্রণ নিয়মিত মাখতে পারেন তাহলে দেখবেন স্বল্প সময়ের মধ্যে আপনার যে সকল পাকা চুল গুলো রয়েছে তা ধীরে ধীরে কাল হতে শুরু করেছে।
উপরের পদ্ধতিগুলোর নিয়মিত অনুসরণ করলে সহজে ঘরে বসে থেকে অকালে চুল পাকা রোধ করা সম্ভব। সুতরাং আপনাদের জন্য আমরা যে সকল তথ্যগুলো উপরের অংশ শেয়ার করেছি তা যথাযথভাবে অনুসরণ করার চেষ্টা করবেন। চুল পাকা বন্ধ করার জন্য যেসকল নির্দেশনা আমরা দিয়েছি তার প্রতিটি প্রাকৃতিক এবং কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই আপনি তা ব্যবহার করতে পারছেন। তবে আপনার চুলে যদি অতিরিক্ত সমস্যা দেখা দেয় এ অবস্থায় আপনি অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে তাদের প্রেসক্রিপশন মেনে চলবেন।