Health

কাশি দূর করার উপায় – ঘরোয়া উপায়ে পুরাতন খুশখুশে কাশি দূর করুন

ষড়ঋতুর এদেশে ক্যালেন্ডারের পাতায় ঘুড়ে যখন অক্টোবর মাস শুরু হয়ে থাকে তখন থেকেই শীতকালের আবির্ভাব ঘটে। শীতকালের আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে আমাদের বিভিন্ন ধরনের অসুখ দেখা দেয় এদের মধ্যে আমাদের সকলের যে একটি কমন অসুখ রয়েছে তা হলো সর্দি জ্বর আর কাশি। যদিও সর্দি ও জ্বর এগুলো স্বল্প সময়ের মধ্যেই ভালো হয়ে যায় কিন্তু কাছে এমন একটি অসুখ যা দীর্ঘসময় ধরে আমাদের শরীরে বাসা বাঁধতে থাকে।

দেখা যায় যে দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত এর রেশ থেকে যায় তবে অনেক ক্ষেত্রে এলার্জি এ্যাজমা শুষ্ক আবহাওয়া ধূমপানের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে কাশি হয়ে থাকে। আমাদের কাশি হলে আমরা অনেক বেশি চিন্তিত হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে আপনাদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা এই যে আপনাকে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কেননা করো কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে আপনি কাশি থেকে পরিত্রান পেতে পারেন।

সুতরাং আপনারা যারা দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন ধরনের কাশিতে ভুগছেন তাদের উদ্দেশ্যে আজকের এই আর্টিকেলটি লিখা হয়েছে। আমাদের আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে পুরাতন কাশি দূর করার উপায়, বাচ্চাদের কাশি দূর করার উপায়, খুশখুশে কাশি দূর করার উপায়। এলার্জি জনিত কাশি দূর করার সকল ধরনের উপায় শেয়ার করা হলো। আমাদের দেওয়া তথ্যগুলো ভিত্তিতে আপনি খুব সহজে এখান থেকে কাশি হওয়ার কারণ এবং তা দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো রয়েছে তা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাচ্ছেন।

কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায়

বিভিন্ন কারণে কাশি হয়ে থাকে অনেক সময় ফুসফুসের সংক্রমণ নিউমোনিয়া যক্ষা ইত্যাদি কারণে আমাদের কাছে দেখা দেয়। এক্ষেত্রে কাদা মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাশি চলতে থাকে এবং বুকে ব্যথা হয়ে থাকে দেখা যায় আরও বিভিন্ন ধরনের রোগ। আপনি যদি এমন ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন। তবে আপনার যদি শুষ্ক কাশি থাকে এবং দীর্ঘদিন যাবৎ কাশির সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আপনাদের জন্য আমরা আপনাদের এখানে বেশ কিছু ঘরোয়া উপায়ে শেয়ার করেছে।

মধু

কাশি উপশমে ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে আমরা প্রথমেই যে বিষয়টির কথা ভেবে থাকে তা হচ্ছে মধু। মধু কাশি কমাতে সাহায্য করে কখনো কোন ওষুধের চেয়ে এর কার্যকারিতা এত বেশি ভালো হয় যে আপনি স্বল্প সময়ের মধ্যেই এর গুনাগুন সম্পর্কে ধারণা পাবেন। মধু কাশি বা ঠান্ডার জন্য আদর্শ ঔষধ হলেও এক বছর বয়সের নিচে শিশুদের মধু খাওয়ানো একেবারেই উচিত নয়।

এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে 2 টেবিল চামচ মধু অর্ধেকটা লেবুর রস আর সামান্য আদার রস মিশ্রণ করে এক থেকে দুই বার রাতে ঘুমানোর আগে খেতে পারেন। অন্যদিকে গরম দুধের সাথে 2 টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন রাতে ঘুমানোর আগে নিয়মিত পান করলে আপনার কাশি দূর হয়ে যাবে।

দিনে তিনবার করে এক টেবিল চামচ মধু খেলে কাশি নিয়ন্ত্রণে আসবে। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চা-চামচ গোলমরিচের গুঁড়া 1 টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে খান দিনে দুইবার খেলে কাশি সেরে যাবে।

বাসক পাতা

বাসক পাতা পানিতে সেদ্ধ করে সেই পানি ছেঁকে নিয়ে কুসুম গরম অবস্থায় খেলে কাশির উপশম কমতে পারে। বাসক পাতার রস আপনি যদি দৈনিক সকালে পানির মাধ্যমে খেতে পারেন তাহলে আপনি দুই থেকে তিন দিন এভাবে যদি ধারাবাহিকভাবে খেতে পারেন তাহলে ভালো ফল পাওয়া সম্ভব। এই পাতা অনেক বেশী তিতো হয় যা দূর করার জন্য আপনি চাইলে এর সাথে সামান্য চিনি মিশিয়ে খেতে পারেন।

তুলসী পাতা

কাশি দূর করার জন্য প্রাকৃতিক যেসকল উপায় রয়েছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হচ্ছে তুলসী পাতা। সে আদিম কাল থেকেই কাশি সারানোর মহৌষধ হিসেবে তুলসী পাতা কে নির্ধারণ করা হয়েছে। তুলসী পাতা বেটে থেঁতো করে এতে কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরী করুন এবং এই মিশ্রণটি দৈনিক দুই থেকে তিনবার যদি নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে আপনার কাশি ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

আদা

আদা ছোট ছোট টুকরা করে তার সাথে লবণ মিশিয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর যদি মুখের মধ্যে রাখতে পারেন এবং একটু করে যাবে তা যদি ঢোক গিলে খেতে পারেন তাহলে দেখবেন যে আপনার কাশির অনেকটাই কম দিয়ে সাহায্য করবেন। অন্যদিকে আপনি যদি চা খেতে পছন্দ করেন তাহলে চায়ের সাথে আদা মিশিয়ে খেলে আপনার কাশির ক্ষেত্রে বিশেষ উপকার পাওয়া সম্ভব।

গরম দুধে হলুদের মিশ্রণ

দুধকে গরম করে এর মধ্যে অল্প হলুদ মেশাতে হবে এবং এই হলুদ মিশ্রিত দুধ আপনি যদি পান করেন তাহলে দেখবেন যে কাশি দূর করতে তা বিশেষ উপকারী। কেননা আপনি জেনে অবাক হবেন যে হলুদ আমাদের কাশি সর্দি দূর করতে বিশেষ সাহায্য করে।

লবঙ্গ

কাশি হলে মুখে একটা লোক রেখে মাঝেমধ্যে একটু করে চাপ দিয়ে রস বের করে গিলে ফেলুন। লপগ এররস যখন আপনার গলার কাছে পৌঁছবে তখন আপনি অনেক বেশি আরাম পাবেন এবং সেখানে যে সকল জীবাণু গুলো রয়েছে সেগুলো খুব সহজেই দূর হয়ে যাবে।

মেন্থল ক্যান্ডি

বর্তমানে দেশের বাজারগুলোতে বিভিন্ন ধরনের মেন্থল দিয়ে তৈরি করা চকলেট পাওয়া যাচ্ছে যা আপনার কাশি দূর করার উপায় হতে পারে। এসকল চকলেটগুলো যদি আপনি দিতে পারেন তাহলে আপনার গলা থেকে কফ বের করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।

গরম পানি দিয়ে গরগর করা

আপনার যদি কাশি এবং তার সাথে যদি গলা ব্যথা করে তাহলে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা চা-চামচ লবণ মিশিয়ে 10 থেকে 15 মিনিট আপনি সেই পানি দিয়ে গরগর করতে পারেন। গরগর করার ক্ষেত্রে আপনি কিছুক্ষণ বিরতি দিতে পারেন এবং বিরোধী দেওয়ার পর তা পুনরায় আবার শুরু করুন। আবে আপনি খুব সহজেই কাশি কমাতে কার্যকরী ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারবেন।

এছাড়াও কাশি হলে ঠাণ্ডা পানির পরিবর্তে যতটুকু সম্ভব গরম পানি ব্যবহার করুন বিশেষ করে গোসল করার ক্ষেত্রে গরম পানি দিয়ে গোসল করার চেষ্টা করুন এবং সারা দিনে যে সকল খাবার পর গরম পানি পান করার চেষ্টা করবেন। অন্যদিকে ঠাণ্ডাজাতীয় কোন খাবার বিশেষ করে ফ্রিজের কোন খাবার খাবার থেকে অবশ্যই বিরত থাকবেন।

এ সকল পদ্ধতি অনুসরণ করার পরেও যদি আপনার কাশি না কমে তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন। ডাক্তার আপনাকে সঠিক পরামর্শ দেবেন এবং প্রেসক্রিপশন তৈরি করে দেবে যেখানে বিভিন্ন ধরনের ঔষধের নাম লেখা থাকবে। নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার ফলে আপনার দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে পারবেন।

Related Articles

Back to top button
Close