Health

চুল সোজা করার উপায় – ঘরোয়া ভাবে চুল সোজা করার উপায়

আধুনিক এ যোগ ফ্যাশানের যুগ যার কারণে এখনও অনেকেই রয়েছেন যারা চুলকে নিজেদের ফ্যাশন এর আওতাভুক্ত করতে চান। চুল আমাদের শারীরিক সৌন্দর্যকে বৃদ্ধি করে যার কারণে আমরা সর্বদা চাই আমাদের চুলগুলোকে সুন্দর ও মার্জিত রাখতে। কালি ফ্যাশনের যুগে চললেও এখনও অনেকেই স্টেট চুল এর ভক্ত আছেন যারা এখনো রিবন্ডিং করার জন্য পার্লারে ছুটে যাচ্ছেন বা দিয়ে চুল সোজা করতে চাচ্ছেন।

আপনার চুল গুলো কি বাঁকা যা আপনাকে একঘেয়েমি করে তুলেছে এই অবস্থা থেকে বাঁচার জন্য আপনি হয়তো বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত আপনার চুলগুলো সোজা করতে পারেননি। যার কারণে আপনি চরম হতাশার মধ্যে পড়ে গিয়েছেন। চিন্তার কোন কারণ নেই কেননা আজকে আমরা আপনাদের সাথে কোন রকম কেমিকাল বাহির ছাড়াই কিভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে আপনার মনের মতন হেয়ারস্টাইল করবেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করেছি।

আমরা আপনাদের এখানে চুল সোজা করার জন্য যে সকল প্রাকৃতিক উপায় রয়েছে সে সকল উপায়গুলো নিয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি উপাদানের ব্যাখ্যা প্রদান করেছে। তাহলে চলুন জেনে নেই কিভাবে প্রাকৃতিক ভাবে সোজা চুল পাওয়ার উপায় গুলো।

প্রাকৃতিক ভাবে সোজা চুল পাওয়ার উপায়

সাধারণভাবে আমরা আমাদের চুলের প্রতি অনেক বেশি গুরুত্ব প্রদান করে যার কারণে আমাদের চুল গুলো যদি একটু করা হয়ে থাকে তাহলে আমরা চরম হতাশার মধ্যে পড়ে যাই। এই অবস্থা থেকে বাঁচার জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করি অথবা চুলের বিভিন্ন ধরনের শ্যাম্পু এবং পার্লারে গিয়ে চুলের সাথে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চাই। তবে নিচের অংশে আমরা সম্পূর্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই নারকেলদুধ সহ বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে কিভাবে চুল সোজা করা যায় তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেছি।

নারকেল দুধ এবং লেবু

আপনি যদি চুল সোজা করতে চান তাহলে প্রাকৃতিক ভাবে আমরা আপনাদের জন্য যে উপায়টি প্রথমে শেয়ার করব তা হল তাজা নারকেল দুধে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে তারপর তা ব্যবহার করুন। তারপর এই মিশ্রণটি কে কয়েক ঘণ্টার জন্য আপনাকে ফ্রিজে রাখতে হবে এবং একটি ঘন ক্রিমি লেয়ার দেখা যাবে পাত্রের উপরের অংশে। এই লেখাটুকু আপনার দরকার চুল সোজা করার জন্য পুরো চুলে তেল লাগিয়ে নিন এমন কি আপনার চুলের যে ত্বক রয়েছে সেখানেও লাগাতে পারেন।

15 থেকে 20 মিনিট ধরে চুল ট্রিম করুন এবং সবশেষে ধুয়ে ফেলুন সমস্ত চুল। এভাবেই প্রতিনিয়তঃ আপনি যদি এভাবেই ধীরে ধীরে নারকেল দুধ ও লেবুর মিশ্রণ ব্যবহার করেন আপনার চলে তাহলে দেখবেন আপনার চুল সোজা হতে শুরু করেছে।

সেলেরি

কয়েকটি ফ্রেশ সেলারি পাতা ক্রাশ করে নিন এবং পানিতে মিশিয়ে কিছুক্ষণ রাখুন। এরপর পানির ভেতর হাত দিয়ে পাতাগুলো আরো ভালোভাবে কচলে নির্জন পাতার নির্যাস পানিতে খুব সহজে মিশে যায়। তারপর যে মিশ্রণটি তৈরি হবে তা বোতলে সংরক্ষণ করে রাখুন একদিন। এতে করে পাতার ভেতরের চুল সোজা করার পর যে যে উপাদান আছে সব ভালোভাবে নিশ্চিত হবে এবং একটি মিশ্রণ তৈরী হবে।

প্রতিদিন গোসলের আগে আপনার চুলে আইসোলেশন লাগিয়ে 15 থেকে 20 মিনিট রাখুন তারপর শ্যাম্পু করে মাথা ধুয়ে ফেলুন। যারা দেশের বাইরে থাকেন তাদের জন্য এই উপাদানটি খুঁজে পাওয়া কোন ব্যাপার না কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের এই উপাদানগুলো পাওয়া একটু বেশি কঠিন।

দুধের পুষ্টি

আমরা সবাই জানি যে দুধ মশ্চারাইজার এর কাজ করে আর এটি চুল সোজা করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফুঁটিয়ে ঠান্ডা করে নেওয়ার দুধ সংগ্রহ করুন এবং আধা কাপ এবং আধা কাপ পানি দুধের সাথে মিশিয়ে নিন। এবার একটি স্প্রে বোতলে মিশ্রণটি ভরে সমস্ত চুলের স্প্রে করতে থাকুন। এরপর আধা ঘণ্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন।

ক্যাস্টর অয়েল

ক্যাস্টর অয়েলে আছে চুলের সাথে ভোঁদার চুল সোজা করার সকল ধরনের গুনাগুন এই তেল চুলের স্কেল ভালভাবে মাসাজ করুন তারপর চিরুনি দিয়ে চুল বারবারা সাথে থাকুন। যখন চুল আঁচড়াবেন তখন ব্লো-ড্রাই করুনাতে ব্লো-ড্রাই করার পর চুলে যেন তেলতেলে ভাব না থাকে অর্থাৎ চুল শুষ্ক হতে হবে। তারপর একটি ভেজা তোয়ালে দিয়ে চুল জড়িয়ে রাখুন আধা ঘন্টা ধরে। যা আপনার চুলকে অতিরিক্ত হিট থেকে রক্ষা করবে এবং স্টেনলেস বজায় রাখবে।

মধু এবং দুধ

এই মিশ্রণটি শুধু ত্বকের জন্য নয় চুলের জন্য এই ম্যাজিকের মতো কাজ করে থাকে। এক চামচ মধুর সাথে এক কাপ দুধ মেশানো সঙ্গে কয়েকটি স্কার বের করে দিন। এই পেজ 2 থেকে 3 ঘন্টা চুলে লাগে তারপর ভালো মাপের শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করুন তাহলে সিল্কি ও স্ট্রেইট চুল পেয়ে যাবেন।

মুলতানি মাটি ডিম ও চালের গুড়ার মিশ্রন

Fuller’s এ্যার্থ তো আমরা সবাই চিনি কিন্তু এতদিনে জানতাম এটি ত্বকের দীপ ক্লিনিং এর জন্য ব্যবহার করা হয় কিন্তু এটি চুলের যত্ন এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আপনি যদি এক কাপ মুলতানি মাটির সাথে একটি ডিমের সাদা অংশ 2 চামচ চালের গুঁড়া আর পানি মেশাতে পারেন তাহলে দেখবেন একটি মিশ্রণ তৈরী হচ্ছে। তবে লক্ষ্য রাখবেন মিশ্রণটি যেন অনেক পাতলা হয় যাতে সমস্ত চলে তা ব্যবহার করা যায়।

সম্পূর্ণ মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে আধা ঘণ্টা রাখুন আর মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করে চলতে থাকুন। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এটি করুন দেখবেন আস্তে আস্তে আপনার কোঁকড়া চুল কেমন সোজা হয়ে আসছে।

বানানা হেয়ার প্যাক

দুইটি বেস্ট কলার সাথে 2 টেবিল চামচ মধু 2 এবং অলিভ অয়েল আর একটি ডিমের সাদা অংশ মিশ্রন করুন। এই প্যাক পুরো চুলে লাগিয়ে মাথায় একটি শাওয়ার ক্যাপ পড়ে ফেলুন। তারপর 30 মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন এভাবে আপনার চুল অনেকটা সহজে দেখাবে।

উষ্ণ গরম অলিভ অয়েল নারিকেল তেল আর ক্যাস্টর অয়েল দিয়ে আধা কাপ মিশ্রণ তৈরি করুন। এর সাথে আধা কাপ অ্যালোভেরা জেল মেশানো তারপর ছয় ফোটা এসেন্সিয়াল অয়েল মেশাতে হবে।

উপরের অংশ আপনাদের জন্য যে সকল তথ্য শেয়ার করা হলো তার প্রতিটি নির্ভুল এবং কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই তা ব্যবহার করা সম্ভব হবে। আমরা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভাবে সকল তথ্য গুলো করেছে এবং নিজের কাজগুলো করলে খুব সহজেই আমরা চুল সোজা হয়ে যাবে। তবে চুল সোজা করার জন্য আপনার দীর্ঘ সময় প্রয়োজন কেননা আপনি যদি মনে করেন যে স্বল্প সময়ের মধ্যেই আপনার চুল সোজা করবেন তাহলে এই বিষয়টি সম্পূর্ণ ভুল। চুল সোজা করার জন্য কমপক্ষে এক থেকে তিন মাস সময় লাগবে।

Related Articles

Back to top button
Close