চুল গজানোর উপায় – এক সপ্তাহের নতুন চুল গজানোর উপায়
চুল আমাদের শারীরিক সৌন্দর্যের একটি অংশ যার কারণে আমরা প্রত্যেকে চাই আমাদের চুল সুন্দর করতে। আপনি ছেলে হন অথবা মেয়ে যেকোনো বয়সের মানুষের চুল তার শারীরিক সৌন্দর্য বহন করে যার কারণে আমাদের চুল যদি মাথা থেকে অল্প বয়সে ঝরে পড়তে থাকে তাহলে আমরা চিন্তার মধ্যে পড়ে যায়। আপনার কি চুল পড়ে যাচ্ছে অথবা মাথার চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে এমন সমস্যা হয়ে থাকলে আমরা দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে যেতে পারি।
এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনাকে দুইটি কাজ করতে হবে এদের মধ্যে একটি হল চুল ঝরে যাওয়া রোধ করা নিয়ে আর অপরটি হলো চুল গজানো। কিন্তু আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করব কিভাবে নতুন চুল গজানো যায় তার সম্পর্কে সহজ চারটি উপায়।
একজন সুস্থ মানুষের মূলত বয়স বাড়ার কারণে অথবা বংশগত বা পরিবেশের প্রভাবে হঠাৎ করে চুল পড়ে যেতে শুরু করে। এর কারণে আমাদের মন অনেকটাই খারাপ হয়ে যায় আবার মনে হয় যদি কৈশোরের মতো চুল আমার হতো। আমাদের মাথার ত্বক বা স্ক্যাল্পে যদি আমরা উদ্দীপনা দিতে পারে তাহলে নতুন চুল গজানোর সম্ভাবনা থাকে। বৈজ্ঞানিক সূত্র মতে আমরা জানতে পারি যে প্রতিটি চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন এর ব্যবস্থা রয়েছে এটাকে যদি বাড়ানো যায় তাহলে নতুন চুল গজানো সম্ভব।
মাথায় নতুন চুল গজানোর উপায়
আমরা আপনাদের আর মূল্যবান সময় নষ্ট করতে চাই না যার কারণে এখন আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি মাথায় নতুন চুল গজানোর যেসকল সহজ উপায় রয়েছে সে সকল তথ্যগুলো শেয়ার করতে।
প্রথম উপায়
আলোচনার শুরুতে আমরা আপনাদের সাথে যে তথ্যটি শেয়ার করবো তা হলো আপনার মাথাতে যদি নতুন চুল গজাতে চান তাহলে এর প্রধান উপায় যা হলো তা হলো আপনার মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন এর সুব্যবস্থা করা। যার কারণে আপনাকে মাথা ম্যাসাজ করতে হবে। আপনাকে নিয়মিত চুল মাসাজ করতে হবে এতে করে আপনার মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে এবং মাথার ত্বক উদ্দীপিত হবে। এক্ষেত্রে আপনি এক টেবিল চামচ ভিটামিন-ই নিয়ে মাথায় মাসাজ করতে পারেন।
কেননা ভিটামিন-এ চুলের জন্য প্রয়োজনীয় নিউট্রিশন এর যোগান দিয়ে থাকে। ভিটামিন ই এর পাশাপাশি যদি চায়ের নির্যাস যোগ করতে পারেন এদুটো ভালোভাবে মিশিয়ে হাতের তালু দিয়ে আঙুলের সাহায্যে পুরো মাথার চুলের গোড়ায় গোড়ায় লাগিয়ে দিন। এভাবে প্রতিদিন 5 থেকে 6 মিনিট ম্যাসাজ করুন তারপর মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে নিয়মিত চুল আঁচড়ান। চুল গুলোকে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত করে সম্পূর্ণ চুল আঁচড়ে নিন।
মাত্র সাত দিনের মধ্যেই সহজেই মোটা হওয়ার উপায়
কিছুক্ষণ পর সাধারণভাবে শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এভাবেই আপনার নতুন চুল গজানোর জন্য দিনে তিন থেকে চারবার মাসাজ করতে হবে। কিন্তু প্রতিবার মাসাজ করার পর শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না এতে করে আপনার চুল পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে।
দ্বিতীয় উপায়
আমাদের মানুষের চুলের ত্বক তৈলাক্ত করে দেখা যায় যে চুলের গোড়ায় হেয়ার ফলিকল থাকে। ড্রাইভেশন এর মাধ্যমে যদি ফলিকল উদ্দীপিত করা যায় তবে নতুন চুল গজানো সম্ভব। বর্তমানে এদেশের প্রতিটি বাজারের ভাইব্রেটিং ম্যাসেজার কিনতে পাওয়া যায় এর সাহায্যে আপনি আপনার চুলের তাকে চক্রাকারে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মাথার ভাইব্রেটিং মাসাজ দিতে পারেন। আপনার মাথার যে অংশের চুল বেশি পড়ে যাচ্ছে তাতে বেশি মনোযোগ প্রদান করুন এভাবে 5 থেকে 10 মিনিট যদি আপনার মাথার ত্বকের ভাইব্রেট করতে পারেন তাহলে ভালো ফল পাওয়া সম্ভব। ভাইব্রেটিং ম্যাসেজার দিয়ে আপনি দিনে তিন থেকে চার বার আপনার মাথার ভাইব্রেট করতে পারেন।
তৃতীয় উপায়
এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে যেটা আপনার চুলের ত্বক মৃতকোষগুলো ধরে যেতে সাহায্য করবে। সাধারণভাবে এর মৃতকোষগুলো স্কাল্পের ফলিকল ব্লক করে রাখে যে কারণে নতুন চুল গজানোর পথে তারা বাধা সৃষ্টি করে। কেননা তখন স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন কমে যায় এবং অল্প পরিমাণ শ্যাম্পু নিয়ে যদি আপনি মাথায় মাসাজের মত করে লাগিয়ে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে পারেন তাহলে এটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে।
নতুন চুল গজানোর জন্য খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন
আপনার চুল যদি ঝরে পড়তে থাকে এবং আপনি এই নিয়ে হতাশায় ভোগেন তাহলে ব্যাপারটা অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। এ অবস্থায় আপনাকে আপনার চুলের ব্যাপক যত্ন গ্রহণ করতে হবে শুধুমাত্র চুল মাসাজ করে রক্ত সঞ্চালনের ব্যবস্থা করলেই যে নতুন চুল গজাবে ব্যাপারটা সম্পূর্ণ ভুল। এক্ষেত্রে আপনাকে খাদ্যাভাসে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে। মেসেজ করার পাশাপাশি আপনি যদি এসকল খাবারগুলো খেতে পারেন আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার মাথার চুল স্বল্প সময়ের মধ্যেই বের হবেন।
প্রোটিন
আপনার খাবার তালিকায় প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে পারেন কেননা আপনার চুলে মূলত কেরাটিন দিয়ে গঠিত। অ্যামিনো এসিড দিয়ে তৈরি এক ধরনের প্রোটিন। যার কারণে নতুন চুল গজানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই শরীরে পর্যাপ্ত অ্যামিনো এসিড সরবরাহ করতে হবে। আপনার খাবার তালিকায় মাছ মাংস দুধ ডিম ইত্যাদি যুক্ত করুন এবং প্রতিদিন নিয়মিত খাবার চেষ্টা করুন। এছাড়াও সোয়াবিন মটরশুঁটি কলা বাদাম ইত্যাদি থেকেও আপনি যথেষ্ট কঠিন পেতে পারেন। তবে নন ভেজিটেরিয়ান খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি।
আয়রন এবং জিংক
আয়রন এবং জিংক আপনার মাথার কোষে অক্সিজেন পরিবহন করে নিতে সহায়তা করবে আর নতুন কিছু তৈরিতে সহায়তা করে। যার কারনে আপনার খাদ্য তালিকায় পরিমিত পরিমাণে আয়রন এবং জিংক যুক্ত করুন এবং নতুন চুল গজাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। মটরসুটি বাদাম কলিজা মাংস দুধে প্রচুর পরিমাণে জিংক আয়রন বিদ্যমান।
ভিটামিন সি
পেয়ারা লেবু কমলা আনারস কামরাঙ্গা কাঁচা মরিচ পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি সরবরাহ করে যা আপনার চুলের বৃদ্ধি এবং গঠনের সহায়ক। তাই যে সকল খাবার গুলো ভিটামিন-সি সরবরাহ করে সেগুলোর যথাসাধ্য চেষ্টা করুন।
কালোজিরা
কালোজিরা নতুন চুল গজানোর জন্য সহায়ক মাথায় কালোজিরার তেল ব্যবহার করা আর খাবারে কালোজিরার ব্যবহার করা আপনার ভালো ফল প্রদান করতে পারে।
কিছু সাধারণ যত্ন
- নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখা এবং আছে কিন্তু অতিরিক্ত চুলপড়া বাড়িয়ে দিতে পারে।
- পেঁয়াজের রস চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে 10 মিনিট রাখুন এবং নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনার চুল গজানোর সম্ভাবনা থাকে।
- আপনার চুলে মেহেদি পাতা কিছুদিন ঘনঘন ব্যবহার করতে পারেন পাতা কেটে লাগিয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন।
- শুকনা আমলকি পানিতে ভিজিয়ে লাগাতে পারেন।
- খাঁটি কালোজিরা তেল বা নির্যাস বেশি বেশি ব্যবহার করতে পারলে আপনার চুল গজানোর সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
নতুন চুল গজানোর উপায় তো জেনে নিলেন কথায় বলে রতনে রতন মিলে নিয়মিত যত্ন নিন এবং পদ্ধতিগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করার চেষ্টা করুন। দেখবেন আপনার মাথার চুলগুলো বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করেছে এবং যেখানে চুল ঝরে পড়েছে সেখানে নতুন চুল গজাতে। উপরের অংশের আপনাদের জন্য যেসকল তথ্যগুলো শেয়ার করেছি তার প্রতিটি নির্ভর এবং প্রাকৃতিক উপায়ে আপনি তা ব্যবহার করতে পারছেন।
যার কারণে এখনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই আপনি এখন খুব সহজেই গ্রহণ করতে পারছেন। উপরের দেওয়া নির্দেশনাগুলো যৌথভাবে অনুসরণ করার চেষ্টা করুন এবং আপনার ঝরে পড়া চুল পুনরায় গজাতে সাহায্য করুন। আমাদের পাশে থেকে দীর্ঘ সময় ধরে আর্টিকেল পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।