অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার সম্পর্কে আমরা সকলেই কমবেশী শুনেছি। আপনি হয়তো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর নাম শুনেছেন। আপনি যদি একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই অ্যাপলেট মার্কেটিং সম্পর্কে কোনো বিজ্ঞাপন অথবা ভিডিও দেখেছেন।
টাকা ইনকাম করার যেসকল মাধ্যম রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই এফিলিয়েট মার্কেটিং। আপনার যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে সামান্যতম দক্ষতা থাকে তাহলে এই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দেশ এবং বিদেশের মার্কেটপ্লেসে খুব সহজেই কাজ পাওয়া সম্ভব।
আজকে আমরা আলোচনা করব অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করবেন এবং তার কাজ করার মাধ্যমে কিভাবে ঘরে বসে থেকে মাসে টাকা ইনকাম করা সম্ভব তা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু ধারনা দেব। বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছে যারা তাদের প্রফেসর হিসেবে অ্যাপলেট মার্কেটিং কে বেছে নিয়েছে। কেননা এ সেক্টর থেকে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই অনেক টাকা ইনকাম করা সম্ভব।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কি?
আলোচনার শুরুতে আমরা আপনাদের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে বেশকিছু ধারণা দিতে চাই অনেকের কাছে এমন প্রশ্ন থাকতে পারে এফিলিয়েট মার্কেটিং কি। এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো অনলাইনে কোন কোম্পানির পণ্য বা সেবা একটি নির্দিষ্ট মার্কেটপ্লেসে প্রমোশন বা প্রচারণা করা।
বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো তাদের কোম্পানির প্রচারের স্বার্থে বিভিন্নভাবে ফ্রিল্যান্সারদের হায়ার করে এ পণ্যগুলো বিক্রি করার জন্য। ইন্টারনেটের এই যুগে বর্তমানে আমরা সকলেই অনলাইন ভিত্তিক হয়ে গেছে যার কারণে বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে সকল পণ্য কেনা-বেচা হয়ে থাকে। অ্যাপলেট মার্কেটিং হচ্ছে অনলাইনে পণ্য কেনা বেচার একটি মার্কেটপ্লেস।
মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করুন
অ্যাপলেট মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে কোন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি কমার্স ওয়েবসাইট এর পণ্য বিক্রি করার যে লিঙ্ক রয়েছে তা বিভিন্ন জায়গায় শেয়ার করতে হবে এতে করে কোন গ্রাহক যদি উক্ত পণ্যটি ক্রয় করে এক্ষেত্রে আপনি লভ্যাংশ থেকে মোটা অংকের টাকা পাবেন।
আপনার যদি একটি উন্নত মানের ওয়েব সাইট অথবা ইউটিউব চ্যানেল থাকে তাহলে আপনি সে সকল ওয়েবসাইট অথবা ইউটিউবে মাধ্যমে লিংক শেয়ার করে অন্য কেনাবেচা করতে পারেন। নিচের অংশে আমরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে বেশকিছু আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য কি কি প্রয়োজন?
আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা থাকতে হবে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য অবশ্যই আপনার একটি কম্পিউটার অথবা স্মার্টফোনের প্রয়োজন হবে। অন্যদিকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে যদি আপনার কোন কোর্স সম্পন্ন করা থাকে তাহলে এ কাজটি বুঝতে আপনার তেমন সমস্যা হবে না।
- একটি কম্পিউটার অথবা স্মার্টফোন।
- একটি ওয়েব সাইট অথবা ইউটিউব চ্যানেল।
- ফেসবুক পেজ অথবা ফেসবুক গ্রুপ।
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে দক্ষতা।
- বিভিন্ন পণ্য সম্পর্কে রিভিউ লেখার ক্ষমতা।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা ইনকাম করা যায়?
অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার সহজ এবং অনেক টাকা ইনকাম করা যায় তার সম্পর্কে আমরা সকলে জানি। অনলাইন থেকে ইনকাম করার জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং অন্যতম একটি অংশ হলেও আপনাকে এখানে প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকার জন্য একজন দক্ষ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হতে হবে।
অনলাইন থেকে ইনকাম করার কোন নির্ধারিত পরিমাণ টাকা নির্ধারণ করা হয়নি অর্থাৎ আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং খুলে প্রতি মাসে কত টাকা আয় করবেন তার নির্ধারণ নয়। আপনার ইনকাম আপনার দক্ষতা ও কাদের উপর নির্ভর করে। প্রতিমাসে কমিশন হিসেবে আপনি 1 লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারে আবার অনেকেই রয়েছে যারা কম সময় কাজ করে যার কারণে মাসে 30 হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
ফাইবারে কাজ করে ইনকাম করার উপায়
এফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করা যায় তা নির্ভর করে সাধারণত আপনার প্রোডাক্ট অব কোম্পানির ওপর। আপনি যদি বিদেশী পণ্য বিক্রি করতে পারেন তাহলে এক্ষেত্রে আপনি মোটা অঙ্কের টাকা ইনকাম করতে পারবেন অন্যদিকে যদি বেশি কোন পণ্য বিক্রি করেন এক্ষেত্রে আপনার ইনকাম একটু কম হবে। সুতরাং আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে আপনার কাজের দক্ষতা ও কোম্পানির পারফরমেন্সের উপর অ্যাপলেট মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম করার মাত্রা নির্ভর করে।
- প্রতিটি প্রোডাক্ট বিক্রিতে আপনাকে কত পারসেন্ট কমিশন দেওয়া হচ্ছে।
- আপনি যে প্রোডাক্টটি মার্কেটিং করছেন সেই প্রোডাক্টের দামের উপর।
- যে প্রোডাক্ট এর মার্কেটিং করছে বর্তমানে তার চাহিদা।
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে আপনি যে লিঙ্ক শেয়ার করছেন তা ব্যবহার করে কত জন গ্রাহক পণ্যটি ক্রয় করছে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করব?
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার জন্য প্রথমে অবশ্যই আপনাকে একটি ই-কমার্স প্লাটফর্মে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তবে এসব ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করার ক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কিছু শর্তাবলী অনুসরণ করতে হবে এবং আপনার সকল তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে যে সমস্ত ই-কমার্স প্লাটফর্মে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায় তার একটি তালিকা নিচের অংশে প্রকাশ করা হলো। আপনি চাইলে এসকল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম করুন
- অ্যামাজন এসোসিয়েট
- দারাজ বাংলাদেশ
- বিডি শপ
- রবি টেন মিনিট স্কুল
এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়
আমরা ইতিমধ্যে আপনাদের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে মোটামুটি একটি ধারণা প্রদান করেছে। এখন আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং ব্যবহার করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন কিভাবে তা সম্পর্কে কিছু ধারণা প্রদান করব। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে আপনার একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট অথবা ইউটিউব চ্যানেল থাকা অত্যন্ত জরুরী এতে করে আপনি এই ওয়েবসাইট অথবা ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে সহজেই যেকোন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।
- আপনি যে কোম্পানির পণ্য বিক্রি করবেন তার লিংক আপনার ওয়েবসাইট অথবা ইউটিউব চ্যানেলের আর্টিকেল অথবা কনটেন্ট এর মাঝে প্রদান করুন।
- আপনি যদি হয়ে থাকেন তাহলে আপনি বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্টের রিভিউ লিখে সে রিভিউ এর মাঝখানে পণ্য ক্রয় করার লিংক প্রদান করুন।
- অন্যদিকে আপনি যদি একজন ইউটিউবার হন তাহলে ভিডিও ডিসক্রিপশন এ পণ্যের রিভিউ ভিডিও আকারে প্রকাশ করে উক্ত লিংক প্রদান করুন এতে করে আপনার ভিভারা ওই লিংকে ক্লিক করে পণ্য ক্রয় করবে।
- আপনার যদি একটি ভালো ফেসবুক পেজ অথবা গ্রুপ থাকে তাহলে সে সকল ফেসবুক পেজ অথবা গ্রুপে অন্যের লিংক শেয়ার করে তা থেকে এথলেট মার্কেটিং করতে পারেন।
আমরা আশা করছি যে আমাদের দেওয়া তথ্যগুলো আপনার জীবনকে প্রভাবিত করবে এবং আপনি তা অনুসরণ করবেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে বর্তমানে অনেক তরুণ-তরুণীরা স্বল্প সময়ের মধ্যেই অনেক টাকা ইনকাম করছে তাই আপনি নির্দ্বিধায় তা অনুসরণ করতে পারেন। অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার অন্যতম উপায় সম্পর্কে জানতে আমাদের অন্যান্য আর্টিকেলগুলো পড়তে পারেন।