Banking

বিকাশ একাউন্টের মালিকানা পরিবর্তনের নিয়ম ২০২৪

বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা হচ্ছে বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং সেবা তাদের প্রসার ঘটিয়ে চলেছে। একটি বিকাশ একাউন্ট খুলতে মোবাইল নাম্বারে পাশাপাশি একটি জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া একটি জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে শুধুমাত্র একটি বিকাশ একাউন্ট খোলা সম্ভব।

এক ব্যক্তির নিবন্ধিত সিম কার্ড দিয়ে অন্য ব্যক্তির বিকাশ একাউন্ট খোলার নতুন কোন বিষয় না। তবে নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে নিজের নাম্বার বিকাশ একাউন্ট করা সবচেয়ে বেশি জরুরি। কোনো কারণবশত যদি আপনার বিকাশ একাউন্টের মালিকানা পরিবর্তন করা জরুরী মনে করেন তাহলে আপনি তা সহজেই করতে পারবেন।

তবে বিকাশের মালিকানা পরিবর্তন করার জন্য বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে এবং কিছু কাগজপত্র নিয়ে আপনাকে তা পরিবর্তন করতে হয়। তাহলে চলুন আজকে আমরা জানি বিকাশ একাউন্টের মালিকানা পরিবর্তনের নিয়ম এবং কোন কোন তথ্য দিয়ে আপনি সহজেই বিকাশ একাউন্টের মালিকানা পরিবর্তন করতে পারবেন তার বিস্তারিত সকল তথ্য।

বিকাশ একাউন্ট ও সিমের মালিকানা ভিন্ন হওয়ার কারণ

2012 সালের প্রথম দিকে ব্রাক ব্যাংকের অধীনে আমাদের দেশে বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। যার কারণে এই মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দেশের সুপরিচিত সর্বপ্রথম মোবাইল ব্যাংকিং। যাত্রা শুরুর দিকে বিকাশ কর্তৃপক্ষ একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ রাখেননি কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে একদল প্রতারক চক্র বিকাশ ব্যবহার করে প্রতারণার জাল বিছিয়েছে এ অবস্থা থেকে বাঁচার জন্যই বিকাশ কর্তৃপক্ষ কঠোর হাতে করতে চলেছে।

অন্যদিকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল নাম্বারের সিম রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি চালু হয় 2015 সাল থেকে অর্থাৎ জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে ব্যক্তি মালিকানায় সিম কেনা বেচা শুরু হয়। বিকাশে যাত্রা শুরুর দিকে যদি আপনি অ্যাকাউন্ট খুলে থাকেন তাহলে আপনার মোবাইল নাম্বারের সাথে সিমের মালিকানা নাও মিলতে পারে এ অবস্থায় আপনি অবশ্যই চাইবেন আপনার সিমের মালিকানা ও বিকাশ একাউন্টের মালিকানা পরিবর্তন করতে। একইভাবে, অন্যের নামে বিকাশ একাউন্ট খোলা সিম কার্ডটি হয়তো আপনার নামে নিবন্ধন করেছেন।

কিন্তু বিকাশের নতুন বিধি-নিষেধ অনুসারে যে ব্যক্তির নামে সিমের মালিকানা রয়েছে সে ব্যক্তির নামে বিকাশ একাউন্ট খোলা বাধ্যতামূলক। অর্থাৎ আপনার সিম কার্ড দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে নিবন্ধন করা হয়েছে সেই মোবাইল নাম্বার দিয়েই আপনাকে বিকাশ একাউন্ট খুলতে হবে।

বিকাশ একাউন্টের মালিকানা পরিবর্তন করার নিয়ম

বিকাশ একাউন্টের মালিকানা পরিবর্তন করার শুরুতেই আমরা আপনাদের জানাতে চাই যে আপনি যখন মালিকানা পরিবর্তন করবেন তখন আপনার বিকাশ ব্যালেন্স যেন 0.00 টাকা থাকে অর্থাৎ আপনার বিকাশ একাউন্টে কোন ধরনের টাকা রাখা যাবে না। এরপর আপনাকে আপনার নিকটস্থ বিকাশ কাস্টমার সেন্টারে যেতে হবে মনে রাখবেন কাস্টমার সেন্টারে অবশ্যই বিকাশ একাউন্টের মালিক ও সিমের মালিক দুজনকে উপস্থিত থাকতে হবে।

Screenshot-2022-03-21-at-12-11-05-PM

সাধারণত দুই ভাবে বিকাশ একাউন্টের মালিকানা পরিবর্তন করা যেতে পারে। আপনার বিকাশ একাউন্টের অবস্থা অনুযায়ী এটি ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।

  • বিকাশ একাউন্টের নাম্বার পরিবর্তন
  • বিকাশ একাউন্ট এক এনআইডি (NID) থেকে এনআইডিতে (NID) মালিকানা পরিবর্তন

বিকাশ একাউন্টের নাম্বার পরিবর্তন

মোবাইল নাম্বার এর রেজিস্ট্রেশন ও বিকাশ একাউন্টের রেজিস্ট্রেশন দুইটি যদি আলাদা আলাদা এক ব্যক্তির হয়ে থাকে এ অবস্থায় আপনার বিকাশ একাউন্টের নাম্বার পরিবর্তন করা অত্যন্ত জরুরী। আপনি অবশ্যই যে জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান সেই জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করা আছে সেই সিমের নাম্বার ব্যবহার করবেন।

তাছাড়া হতে পারে আপনার রবি সিমে বিকাশ একাউন্ট খোলা আছে আপনি চান আপনার গ্রামীণ সিমে একাউন্টটি ট্রান্সফার করবেন। এমতাবস্থায় শুধু আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে বিকাশ কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে যেতে হবে।

  • নিকটস্থ বিকাশ কাস্টমার সেন্টারে যেতে হবে।
  • বিকাশ ব্যালেন্সে টাকা শূন্য করতে হবে।
  • বিকাশ একাউন্টের মালিক ও জাতীয় পরিচয় পত্রের মালিক কে দুজনকে জাতীয় পরিচয় পত্রের মূল কপি ও ফটোকপি সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।
  • কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধি আপনার পূর্বের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটি বিকাশ একাউন্ট থেকে ডিলিট করে দেবে।
  • অবশেষে আপনাকে নতুন ভাবে বিকাশ একাউন্ট খোলার সুযোগ দেওয়া হবে।

এক এনআইডি অন্য এনআইডিতে বিকাশের মালিকানা পরিবর্তন

মনে করুন আপনার সিম কার্ডটি আপনার নাম নেই রেজিস্টার করা রয়েছে কিন্তু আপনার বিকাশ একাউন্টটি আপনার বাবা-মা অথবা কোন আত্মীয়র জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে খোলা হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যে পড়লে চিন্তার কোন কারণ নেই কেননা বিকাশ তাদের গ্রাহকদের জন্য নতুন সেবার ব্যবস্থা করেছে।

একজনের এনআইডি থেকে অন্যজনের এনআইডিতে বিকাশ একাউন্ট পরিবর্তনের জন্য, প্রথমেই বিকাশ একাউন্টের ব্যালেন্স 0.00 করে নিন এবং নিচের ধাপ অনুসরণ করুন।

  • আপনার নিকটস্থ বিকাশ জোনাল অফিসে যোগাযোগ করুন।
  • বিকাশ একাউন্টের বর্তমান মালিক (যার নামে বিকাশ একাউন্ট) ও সিম কার্ডের মালিক (যার নামে সিম রেজিস্ট্রেশন) উভয় তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সহ কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে যান।
  • বিকাশ কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস সেন্টার থেকে আপনার পূর্বের জাতীয় পরিচয় পত্রের মালিকানা সরিয়ে দেওয়া হবে।
  • এবার আপনি আপনার নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে ইচ্ছে মত যে কোন সিম ব্যবহার করে নতুন করে বিকাশ একাউন্ট খোলার সুযোগ পাবেন।

আপনারা অনেকেই প্রশ্ন করেছেন যে একটি জাতীয় পরিচয় পত্র এনআইডি কার্ড দিয়ে কয়টি বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়। আপনাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যে একটি জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে শুধুমাত্র একটি বিকাশ একাউন্ট খোলা যাবে অন্যদিকে একটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে কয়টি বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়। এ প্রশ্নটি অনেকেই জানতে চেয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে আমার প্রশ্নের উত্তর হলো যে একটি সিম কার্ড দিয়ে শুধুমাত্র একটি বিকাশ একাউন্ট খোলা যাবে।

অনেকেই রয়েছেন যারা মোবাইলের মাধ্যমে কিভাবে বিকাশ একাউন্টের নাম্বার ও মালিকানা চেঞ্জ করা যায় তার সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তাদের উদ্দেশ্যে আমাদের বিশেষ দ্রষ্টব্য এজেন্ট বিকাশ কর্তৃপক্ষ কোন ব্যক্তি মালিকানায় এই সেবাটি চালু করেনি নাম্বার অথবা মালিকানা পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করতে হবে।

Tags

Related Articles

Back to top button
Close